প্রিয় দেবী (বিরহের চিঠি) ৩

প্রিয় দেবী,

অনেকদিন পর তোমায় লিখছি। কতদিন পর! ঠিক ঠাক মনে পড়ছেনা কিছুই। শুধু মনে পড়ে, শত শত চিঠি পাঠিয়েছি বেনামী ঠিকানায় বহুদিন। হয়ত সেসব কখনো পাওনি তুমি অথবা স্ক্রোল করে সরিয়ে দিয়েছ কোন কিছু না দেখেই।

আজ আবারো লিখছি তোমায়। যখন তুমি আমি দূর বহুদূর।  যখন একটা দেয়ালের এপাশে আমি আর ও পাশে তুমি। দেবী, দেয়াল ভেদ করে আমার ভালবাসার আর্তচিৎকার কি তোমার হৃদয় মন্দিরে পৌছোবে??
যে পূজোর ডালা সাজিয়েছিলাম তাজা রক্ত গোলাপে সে ফুল কি তোমার হৃদয় রাঙাবে?
জানিনা।

দেবী,
আজ আমার অর্ঘ্য অতি সামান্য পাপী পূজারীর। যার দেবীকে চাওয়ার স্পর্ধা হয়ত হবেনা কিংবা দেবীর ভালবাসার স্পর্শ পাওয়ার ব্যাকুলতা মিটবেনা কভু আর ।
 তবুও তোমার প্রতিমার সামনে বারবার এসে দাঁড়াই ভালবাসার অর্ঘ্য নিয়ে। তোমার হৃদয়ের কোণে পাপী পূজারীর জন্য সেই ভালবাসা খুঁজতে। যা একদিন শুধু আমারই ছিলো।

দেবী, 
ভালবাসার মাঝে পাপ আর পূণ্যের হিসেবের খাতা ছুড়ে ফেলে দিয়ে ওই হৃদয় মন্দিরের পূজোর ভার আমায় দেবে কি? দেবে কি ওই হৃদয় মন্দিরে প্রবেশের একচ্ছত্র অধিকার! জানিনা।
তবুও দেবী তোমায় ভালবেসে যাবো। তোমার পূজোয় বারবার সাজাবো পূজোর ডালা, রাঙাবো তোমার ঘর। দুরত্বের মাইলেজ ঘুচাতে পাড়ি দেবো হাজার আলোকবর্ষ।  মহাবিশ্বের প্রতিটি কণাকে মালা গেথে পড়াবো তোমার গলে। তুমি শুধু ভালবাসতে দিও।।

ইতি
-নীলকান্ত

হৃদয়ের আস্ফলন


হৃদয়ের আস্ফলন
           নীলকান্ত



অথৈই সমুদ্রের মাঝে দাড়িয়ে আছে
দুটি দ্বীপ।
তার একটিতে তুমি, অন্যটিতে আমি।
দুজনার দেখা নেই, কথা নেই,আছে শুধু
প্রত্যাশা।
তা কি জানো?
একদিন তোমায় পাব।।

নির্জনে তোমার কথা হয়
সমুদ্রের সাথে।
আমার কথা হয় তোমার দিকে বয়ে
যাওয়া বাতাসের সাথে।
শুধু কথা হয়না তোমার আমার।

সমুদ্রের বাতাসে বলাবলি করে।
কিন্তু সে কথা তুমি বুঝো না।
বুঝিনা আমিও।
তুমি কান পেতে থাক বাতাসে
আর আমি সমুদ্রে।


এমনি ভাবে আমাদের কথাগুলি
জমা হয়।
একদিন বলা হবে বলে।
তোমাকে পাব বলে।

মাঝে মাঝে সমুদ্রটা উত্তাল হয়,
বুঝি, তোমার কথা সে আমাকে বলছে।
বাতাসের তাণ্ডব চলে,
বুঝি আমার কথা তোমার কানে পৌঁছেছে

সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি আমাকে
বলে-
তুমি নাকি খুব কষ্টে আছো।
অবিরত তোমার চোখে অশ্রু ঝরে
তোমার হৃদয়ের জলোচ্ছ্বাসে,
সবকিছু উন্মাদ হয়ে গেছে।
নির্বাক সমুদ্রটাও।
তোমার চোখের অশ্রু সমুদ্রের
জলে মিশে, হয়েছে প্রলয়ংকারি
জলোচ্ছ্বাস।
ভেসে গেছে সব।
শুধু ভাসিনি আমি।।

বাতাসের তাণ্ডবে বুঝেছি-
তোমার হৃদয়ে বয়ে চলেছে একহাজার মাইল
বেগে টর্নেডো, ঘূর্ণিঝড়।
অবিচল অতঃপর-
চেয়ে আছো আমারি পথ চেয়ে
আমারি মত করে।



মস্তিস্ক থেকে মস্তিস্কে ডেটা ট্রান্সফার, এটা কি অসম্ভব!!!

একজনের মস্তিস্ক থেকে অন্যজনের মস্তিস্কে স্মৃতি/ডেটা ট্রান্সফার, এটা সম্ভব!
---------------------------
যদি একশ জনকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে,সবচেয়ে কঠিন কাজ কোনটি, কায়িক শ্রম নাকি পড়াশোনা?
তবে আমার বিশ্বাস একশত জনই বলবে,"পড়ালেখা"।
কারণ, আপনি আপনার যে কোন কাজ অন্যকে দ্বারা করিয়ে নিতে পারেন।কিন্তু পড়াশোনা?
ইটস ইম্পসিবল।
আপনার পড়াশোনা অন্য কেউ করে দিতে পারবে না।আপনারটা আপনাকেই করতে হবে। এটা সবাই জানে ।
আর এই বিষয়টা নিয়েই এখন আমার যত মাথা ব্যাথা। আচ্ছা,এমন কি হতে পারে না যে,একজন পড়ালেখা করে তার মেমরি তে যা সঞ্চয় করেছে তা অন্য জনকে ট্রান্সফার করে দিতে পারবে!! Like computer's data transferring.
হলে বেশ ভালই হত বটে। আমার মনে হয় দূর ভবিষ্যতে এটাও করা সম্ভব হবে।আর সম্ভব হবে এ জন্যই যে-
ধরুন, আমাদের মস্তিস্কের একটা অংশ যা স্মৃতি সংরক্ষণ করে তা কম্পিউটারের একটা হার্ডডিস্ক/ মাইক্রো চিপের মত।অসংখ্য নিউরন দ্বারা গঠিত এই অংশ। যা কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক এর মতই কাজ করে।আমরা আমাদের ইনপুট অর্গানিজম চোখ,কান,নাক,মুখ(জিহ্বা  যা স্বাদ মনে গ্রহন করে) দেখি,শুনি,গন্ধ নেই, স্বাদ নেই কিংবা পড়ি তাই এটা সংরক্ষণ করে। তারপর বছরের পর বছর তা স্মৃতিতে ধরে রাখে। আবার মস্তিষ্ক কম্পিউটার হার্ডডিস্ক এর মতই ক্রাশ করে। আর তখন মানুষ তার স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলে।কিংবা বহু পুরোনো স্মৃতি ধীরে ধীরে মলিন হয়ে যায়। যদি মানুষের মস্তিস্ক এবং কম্পিউটারের মেমরির মধ্যে এতই সামঞ্জস্য তবে কম্পিউটার থেকে যেমন ডেটা ট্রান্সফার করা যায়,মস্তিস্ক থেকে কেন নয়!!
হয়ত আমার কথাগুলো পাগলের প্রলাপ মনে হতে পারে।আর হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারন ইতোপূর্বেও যারা স্থান-কালের উর্ধ্বে কিছু বলেছে তাদের কথা গুলোকেও প্রলাপ বলে হেয় করা হয়েছে। কিন্তু যখন তার কথা বা তত্ত্ব প্রমাণিত হয়েছে তখন তারই ফলাফল আমরা সাদরে গ্রহন করেছি,আর করবোও তাই।
আমার বিশ্বাস দূর ভবিষ্যতে একজনের স্মৃতি অন্যজনকে ট্রান্সফার করা সম্ভবপর হবে।শুধু তাই নয়,এর দ্বারা আমরা বহু পুরোনো তথ্য পূর্বপুরুষের কাছ থেকে নিয়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে রাখতে পারব।
নীলকান্ত®

সুশান্ত দা এর লেখা সমূহ

সুশান্ত দা'এর ফেসবুক থেকে নেয়া ।তার অসাধারন কথা,গল্প,অনুপ্রেরণাদায়ক লেখনী সংগৃহীত করার ছোট্ট প্রয়াস। এখানে ২১ জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ০৪ এপ্রিল ২০১৬ পর্যন্ত তার পোষ্টকৃত লেখা গুলো রয়েছে।


নারীর কুমারীত্ব এবং পুরুষ

বিয়ের পর পুরুষ অসহায়!
আজ একটু অফ টপিকে যাব।তাঈ টপিকটা যেহেতু সেন্সেটিভ এবং এডাল্ট তাই আমার শ্রদ্ধেয় গরু জনদের এবং স্নেহের বাচ্চাদের এখানেই ইতি টানতে অনুরোধ করছি।#প্লিজ আর পড়ার দরকার নাই।
আমার এই পোষ্টটি শুধুমাত্র অবিবাহিত ও বিবাহিত  বন্ধু বান্ধবীদের জন্য ।
মূল প্রসঙ্গে আসিঃ
ভার্জিনিটি নিয়ে অবিবাহিত পুরুষের জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। সেই সাথে অবিবাহিত নারীদেরও।  বিয়ের আগে সব ছেলেই তার হবু বউ ভার্জিন হবে সেটাই আশা করে।আর নারীরা আশা করে এমন একজন পুরুষকে যার কাছে সে মানুষিক ও জৈবিক সুখ পাবে।এ ক্ষেত্রে পুরুষের প্রথম পছন্দ স্ত্রী যেন কুমারী হয়।
যাদের কপাল ভালো তারা পেয়েও যায় আর মন্দ কপালে দের জন্য মুখ বুজে মেনে নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এর মধ্যে যারা সত্যিই কুমারী তারা নির্ভয়ে থাকে । নিজেকে উজার করে দেয় প্রিয় মানুষের কাছে।কিন্ত যে নারী কুমারীত্ব হারিয়েছে পূর্বেই সে নারী হয়ত তার কুমারীত্ব প্রমাণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়।
মিলন শেষে মেয়েটা ভাবে, "যাক বাবা,আহ উহ করে বেঁচে গেলাম।" সো টেনশনটি নট।
আরে আপারা,এত কষ্ট করার কি দরকার!পুরুষের একটা গোপন কথা বলি,"অধিকাংশ পুরুষই নারীর কুমারীত্ব আছে কি নাই তা টের পায়না। হয়ত জানেও না, বুঝেও না। তাই, নো টেনশন।
কিন্তু এটাও সত্য যে নারীর স্পর্শই বলে দেয় সে কুমারী আছে কি নাই।আর অন্যান্য নিয়ামত সমূহ তো আছেই।
যাই হোক,
কোন ছেলেই তার বউ ভার্জিন না হলেও অন্যকে বলতে যায় না,যাবেও না।সে সব কিছু মেনে নেয় এই ভেবে যে,"Past is past ".আর অন্যকে বলার তো প্রশ্নই আসে না  । বরং সব জেনে বুঝেও তার স্ত্রী কে বুঝতে দেয় না যে সে সব বুঝতে পেরেছে। কারণ একটাই,যেন সংসারটা বিষের না হয়।
কিন্তু পুরুষ যখন সব কিছু জেনে বুঝেও মুখ বুজে চুপ করে থাকে।তখন নারীর উচিত তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।  পূর্বের জীবন ভুলে নতুন জীবন শুরু করা। কিন্তু বর্তমান যুগে যা দেখা যায় তা সম্পূর্ণ বিপরীত। আর তাই সংসার হয় অশান্তির বীজাগার আর সম্পর্ক গুলো হয় ক্ষনস্থায়ী। এরই মধ্যে নারীর হাতে একটা ফালতু আইনি অস্ত্র আছে যা সে  বেচারা স্বামীর উপর কথায় কথায় প্রয়োগ করতে উদ্যত হয়।
কি আর করার তখন?
তখন পুরুষ হয়ে উঠে অসহায়!:P
নারী বিদ্বেষী মনে হচ্ছে আমাকে, তাই না?
না রে ভাই,আমি একদম নারী বিদ্বেষী নই। :)
২।
নারীর কুমারীত্ব নিয়ে বহু কথা বলেছি।এবার আসি পুরুষের কুমারত্ব নিয়ে । দুঃখিত ভাই, সৃষ্টিকর্তা পুরুষের কুমারত্ব নির্নয়ের জন্য কোন মাপ কাঠি দেন নাই,পদ্ধতিও কেউ কোন দিন জানায় নাই।যা দিয়েছেন তাতে পরিমাপ করার কিচ্ছু নাই। পুরুষ নিজেই ছাড়া আর কেউ জানে না সে একগামী না বহুগামি!
বাইচ্চা গেছস ব্যাটা,নইলে গর্তে পইড়া যাইতি! :P

প্রেম কখনো নিঃস্বার্থ হতে পারেনা।(আর্টিকেল)

নিঃস্বার্থ প্রেম বলে পৃথিবীতে কোন প্রেম নেই।এমনকি প্রেমের ক্লাসিফিকেশনেও নিস্বার্থ প্রেমের অস্তিত্ব নেই।তার মানে হলো,নারী বা পুরুষের প্রেম,খোদার প্রতি বান্দার প্রেম, প্রকৃতির প্রতি মানুষের প্রেম সকল প্রেমেই কোন না কোন স্বার্থ জড়িয়ে আছে।
কিভাবে?
আচ্ছা,তার জন্য শুধু দু' একটা প্রেমের ব্যাখ্যায় যাচ্ছি তাহলেই বাকি সব তথাকথিত নিঃস্বার্থ প্রেমের মাঝে স্বার্থপরতা খুঁজে পেতে কষ্ট হবে না।।
প্রথমত,প্রকৃতি ও মানুষের প্রেমের মধ্যে নজিরবিহীন নিঃস্বার্থ প্রেম দেখা যায়(আপাতদৃষ্টিতে।) । কিন্তু আসলেই কি মানুষ ও প্রকৃতির প্রেমে কোন স্বার্থ জড়িয়ে নেই? অবশ্যই আছে। মানুষ প্রকৃতির সাথে প্রেম করে। ভালবেসে প্রকৃতির পরিচর্যা করে।গাছ লাগায়,বায়ু দূষন,শব্দ দূষন রোধে  আইন পাশ করে।মিটিং করে,মিছিল করে, সবই করে।আর যেগুলো করতে পারেনা তাও করার চেষ্টা চালিয়ে যায়।প্রকৃতির প্রতি মানুষের এ প্রেম,"প্রেম নেহি তো কিয়া হ্যায়!" কিন্তু ইডা কি নিঃস্বার্থ প্রেম? অসম্ভব।
মানুষ প্রকৃতিকে ভালবাসে নিজের সুখের জন্য,সৌন্দর্যের জন্য আর বেঁচে থাকার জন্য  । প্রকৃতির উপকরণ মানুষের কাজে না আসলে এ প্রেম কখনোই আসতো না।
তারপর আসি খোদার প্রতি মানুষের প্রেম । আরে ভাই,এইডা তো জলের মত ক্লিয়ার! খোদার প্রতি মানুষের ভক্তি বা প্রেম হলো স্বার্থপরতার চরম উদাহরন। খোদাকে ভাল না বাসলে কপালে স্বর্গ জুটবে না,পরকালে শাস্তি পেতে হবে এরূপ ভয়ই হলো খোদার প্রতি মানুষের ভক্তি দেখানোর অন্যতম কারন।তবে মূল কারন হলো, "ডিমান্ড"।
মানে,ও খোদা তুমি আমায় স্বর্গ দাও,দুনিয়ায় ভাল একটা বউ দাও,চাকুরী দাও,রোগ-বালাই হতে মুক্তি দাও,এটা দাও,সেটা দাও, ওটাও দাও । যা আছে সব দাও।
এই চাওয়া গুলো না থাকলে মানুষ কখনো খোদার কথা মনেই করত না।প্রেম তো দূরের কথা। প্রেম বা ভক্তির সাথে যখন বিনিময় যুক্ত থাকে তবে তা,"স্বার্থপরতা নেহি তো অর কিয়া হ্যায়!! "
অতএব, মানুষের প্রেম সর্বদা স্বার্থপর। নিঃস্বার্থপরতা শুধু মাত্র একটা কল্পিত শব্দ ছাড়া কিছুই না!
এবার আসি,নারী পুরুষের নিঃস্বার্থ প্রেমে।নারী ও পুরুষের প্রেম কতটা নিঃস্বার্থ তা বুঝার পূর্বে বুঝতে হবে,

কোন নারী বা পুরুষ পরস্পরের প্রেমে পড়ে কোন কোন কারনে?

প্রথম দর্শনে প্রেম হয় কি কি দর্শন করে?

অতঃপর, প্রেমের চুড়ান্ত লক্ষ্যই বা আসলে কিসে লুকিয়ে থাকে?

উত্তর একটাই, "জৈবিক ও মানসিক শান্তি পাওয়ার ইচ্ছা।"
যখন কোন পুরুষ ও নারী পরস্পরকে দেখে বা পরস্পরের সাথে মিশে এটা অনুভব করে যে,"আমি তার সাথে থাকলে জৈবিক ও মানুষিকভাবে শান্তি পাব" একমাত্র তখনই দুজনার মধ্যে প্রেম জন্মাতে পারে।
আর এর প্রধান লক্ষ্যটা থাকে জৈবিক প্রশান্তি লাভের আশা। জৈবিক প্রশান্তি লাভ না করলে মানুষিক প্রশান্তিই উবে যাবে।তখন ভালবাসা বলেন আর প্রেম বলেন,যাই বলেন বা কেন তা থাকেনা।আবার জৈবিক চাহিদা পূরন হলেও যদি মানুষিক সুখ না পাওয়া যায় সেখানে প্রেম থাকে না । অর্থ্যাৎ "তুমি আমাকে সুখ দাও,বিনিময়ে আমি তোমাকে সুখি করবো" এরকম একটা পরোক্ষ্য বিনিময় চুক্তি জড়িয়ে থাকে  নারী -পুরুষের প্রেমে।
সুতরাং প্রেম শব্দটা নিঃস্বার্থ হতে পারে না।
তাই প্রেমে পড়লে যা বলা হয়,
"দেখ,আমি তোমাকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালবাসি। আমার ভালবাসায় কোন স্বার্থপরতা নেই।"
এটা শুধু কথার কথা। আসলে যে কথাটা বলা হয়না তা হলো, "আমি তোমাকে ভালবাসি কারন আমি স্বার্থপর। "
#নীলকান্ত

নায়িকা ও আমি নীলকান্ত #১ম অংশ (ছোট গল্প)


নায়িকা ও আমি নীলকান্তঃ ১
#১
গল্পের নায়িকাকে বারবার ফ্লাশব্যকে যেতে দেখে শুধালাম,
" তা আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? "
নায়িকা উত্তরে বললেন,"যখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি, তখন ভাবতাম ডাক্তার হবো। তারপর আরেকটু বড় হয়ে শিক্ষিকা হবার শখ।"
এবার আমি জোড় করে তাকে বর্তমানে টেনে আনলাম,"ওহ হো,একটা কথা বলতে তো ভুলেই গেছি! "
নায়িকা উচ্ছাসিত কন্ঠে বললেন,"কি?  কি? "
"না, মানে আপনার হাসব্যান্ড কই থাকেন?" একটু নীচু স্বরে বললাম।
এবার নায়িকা তার নিজের আপাদমস্তক একবার চোখ বুলিয়ে বললেন, "আমার বয়স কি খুব বেশি মনে হয়? "
আমি বললাম, "ছি ছি,তা কেন! আপনাকে দেখে কেউ বুঝতেই পারবেনা আপনার বিয়ে হয়েছে? "
এবার নায়িকা কিছুটা লাজুক হেসে বললেন," আপনার যে কথা! আমার তো আসলেই বিয়ে হয়নি! "
মনে মনে ভাবলাম , তা তো বটেই। বিয়ে হবে কি করে! যার পাষ্টটা এত রোমাঞ্চকর, তার বিয়েটা একটু দেরীতে হওয়াটাই স্বাভাবিক। তা না হলে এত মধুর মধুর স্মৃতির জন্ম হত কোথা থেকে!
ভেতরের ভাবটা জোর করে চেপে রেখে অতি কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,"তাই নাকি? বিশ্বাসই করতে পারছি না। আমি ভাবতেও পারিনি আমার ধারনা টা মিলে যাবে! আমি মনে মনে সেটাই ভাবছিলাম বটে।"
আমার অতি উৎসাহ দেখে নায়িকা বেশ খুশিই হলেন।লাজুক মুখটা একটু নীচু করে,  নিজের বাম হাতের আঙুলের নখ দাঁতের নীচে দিয়ে হেসে হেসে বললেন, "জানেন, এই গত কয়দিন আগেও বিয়ের প্রস্তাব এসেছিলো। প্রায় প্রতিদিনই আসে।আমিই নাকচ করে দেই।"
আমি কৃত্রিম কৌতুহলে জিজ্ঞাস করলাম, "কেন কেন? "
"এই ঠিক মত ছেলে পাইনা তাই। কেউ কেরানীর চাকুরী করে,কেউ দপ্তরি,কারো আবার বউ মারা গেছে!
আপনিই বলেন,এদের সাথে আমার কি যায়? " নায়িকা কিছুটা অভিমান নিয়ে বললেন।
আমি বললাম, "নাহ! কিছুতেই না।এসব লোকজন আপনাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার সাহস পায় কি করে! ছি ছি!  আপনি কি এতটাই ফেলনা হয়ে গেছেন নাকি?
'  তা ম্যাডাম, আপনার কি ধরনের ছেলে পছন্দ? "
এবার নায়িকার মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। লজ্জাবনত মুখে লাজুক হেসে বললেন,"এই আপনার মত।স্মার্ট, লম্বা,সুন্দর দেখতে,স্বাস্থ্য ভালো, সুন্দর করে কথা বলতে পারে এমন কাউকে।"
এতক্ষনে নায়িকা যে লজ্জা পাচ্ছিলেন তার চেয়ে দশগুণ বেশি লজ্জা পেলাম আমি। মনে মনে বললাম,বলে কি রে!
নায়িকার কথা তখনো শেষ হয়নি।তিনি কথার সাথে আরো যোগ করলেন, "আপনার মত শ্যামলা হলেও চলবে।জানেন,আপনাকে না অপূর্বর মত লাগে! "
লজ্জা পাওয়ার আরো কিছু বাকি ছিল ঠিক ভাবিনি।শেষের কথাতে আরো বেশিই লজ্জা পেলাম। বলে কি?
কোথাকার কি,পান্তাভাতে ঘি!  কই অপূর্ব আর কই নীলকান্ত!
তবে এই তুলনা যে প্রথম শুনছি ঠিক তা না।এর আগে কমছে কম হাজার জন একই কথা বলেছেন।যদিও আয়নার সামনে দাড়ালে ঠিক বিশ্বাস হয়না, আর মিলাতেও পারি না।
যাই হোক,
যে পাঞ্চগুলো এতক্ষন আমি নায়িকাকে দিচ্ছিলাম,নায়িকা তা যে এভাবে ফেরত দেবেন তা ভাবতে এবং বুঝে উঠতে একটু সময় লেগে গেলো।
আমি নায়িকাকে উদ্দেশ্য করে বললাম, "কি যে বলেন আপনি! কোথায় আমি আর কোথায় অপূর্ব! আর আপনার মত মেয়ে আমার মত ছেলেকে পছন্দ করবেন কেন? আপনার আরো ভালো ছেলের সাথে বিয়ে হবে,দেখবেন।"
নায়িকা এবার একটু নড়েচড়ে বসলেন।কি যেন বলতে চেয়েও বললেন না। এদিকে আমি কোন মত এই স্থান ত্যাগ করবার অভিপ্রায়ে কাঁচুমাচু করছি।বারবার রিষ্ট ওয়াচটার দিকে তাকাচ্ছি আর ভাবছি, কি বলে এখান থেকে উঠা যায়!  সময়ও কম হলো না,সাড়ে পাঁচটা মত বাজে। আমি রিষ্ট ওয়াচ থেকে মুখটা তুলে নায়িকার মুখটা ওয়াচ করবো বলে যেই না তাকিয়েছি ওমনি অবাক হয়ে দেখলাম, একি! নায়িকা যে কাঁদছেন!!
কিন্তু কেন, তা ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। আমি তাকাতেই তিনি তার উড়নার আচল দিয়ে চোখ মুছলেন। কিছুটা বিব্রত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,
"ম্যাডাম, আমি কি কোনভাবে আপনাকে কষ্ট দিয়েছি? প্লিজ নিজের অজান্তে কোন ভুল করলে ক্ষমা করবেন। "
এবার নায়িকা তার চোখের জলে ভেজা আচলটা হাতের আঙুলে জড়িয়ে আবেগাপ্লুত কন্ঠে বললেন,
"এত দিন অনেক মানুষের সাথে কথা বলেছি,কিন্তু কেউ আপনার মত করে আমার সাথে কথা বলেনি। সবাই আমার দূর্বলতার সুযোগ খুঁজেছে। একমাত্র আপনার সাথে কথা বলে আজ যত ভালো লাগলো, তা আমি কোনদিন ভুলবো না। গত দুই ঘন্টা আমার কাছে আজীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে।"
নায়িকা আর কিছু বললেন না।কেমন যেন চুপসে গেলেন।এদিকে আমার নিজের কাছে নিজেই খুব বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে গেলাম। একজন মানুষ তার অতীতের দুঃখগুলো আমার সাথে শেয়ার করছিলেন কিন্তু আমি? আমি স্বার্থপরের মত তার কথা গুলোকে নিছক বাজে অতীত ভেবে কিভাবেই না অগ্রাহ্য করেছি!  তারপর আবার এখান থেকে পালানোর জন্য পথ খুঁজছি। ছি ছি! আমি এতটা স্বার্থপর??
নায়িকাও নীরব,আমিও নীরব। ড্রয়িং রুমের সিলিং ফ্যানের শ শ শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ নেই। বেশ কিছুক্ষন এভাবে যাবার পর নায়িকাই প্রথমে কথা পারলেন,
"নীল,আজ আপনি আমার বাসায় ডিনার করে যান।ফ্রিজে মাংশ আছে আর আমি ভালো বিরিয়ানি করতে পারি।আপনার অনেক ভালো লাগবে।"
আমি স্বাভাবিক ভদ্রতা বশত বললাম,না না।তার দরকার নেই।আজ আপনার সাথে ডিনার করতে পারছি না।অন্য কোনদিন নিশ্চয়ই করবো।
আজ যে আমাকে উঠতে হচ্ছে!  প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো। "
নায়িকা এবার ধরা গলায় বললেন, "হোক না! আজ ডিনার টা করে যান।আর কোনদিন আসবেন কি না, তা বলা যায় না।
অন্তত আজকে,প্লিজ।"
একবার ভাবছি,অনুরোধ টা রাখি।আবার মনে হচ্ছে,নাহ! আজ আর না। শেষপর্যন্ত ভাবনার দোলাচালে ২য় সিদ্ধান্তটাই স্থির করলাম।
উঠে দাঁড়িয়ে নায়িকাকে বললাম, আজ আমাকে উঠতেই হচ্ছে।সন্ধ্যার পরে বিশেষ একটা কাজ আছে। প্লিজ মন খারাপ করবেন না।।
নায়িকা এবার দাবির সুরে বললেন,"কাজটা কি খুব জরুরী? "
বললাম,"হ্যা।বেশ জরুরী। "
নায়িকা বললেন, "ঠিক আছে,খুব জরুরী কাজ থাকলে যান।কিন্তু কথা দিতে হবে, আরেকদিন আসবেন।"
আমি মুচকি হেসে মেইন দরজার সামনে এসে দাঁড়ালাম। বললাম,
যদি সৃষ্টিকর্তা আবার কখনো সুযোগ দেন,তবে অবশ্যই আসবো।
নায়িকা আমাকে মূল রাস্তা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে দিতে বললেন, "অবশ্যই দেবেন।আর দিতেই হবে। 
আপনার সাথে ২য় বার দেখা না হওয়া পর্যন্ত আমি মরতে চাই না।"
কিছুটা অপ্রতিভ হয়ে নায়িকার মুখের দিকে তাকালাম। তার চোখে ছলছল জল,সকরুণ আহবান। সেখানে কোন কৃত্রিমতা নেই।না আছে অন্য কোন কিছু। আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। একটা খালি রিকশা আসতেই দ্রুত উঠে পড়লাম।একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে বললাম,"ভালো থাকবেন।"
Nilkanto( নীলকান্ত)

প্রিয় দেবী (বিরহের চিঠি) ৩

প্রিয় দেবী, অনেকদিন পর তোমায় লিখছি। কতদিন পর! ঠিক ঠাক মনে পড়ছেনা কিছুই। শুধু মনে পড়ে, শত শত চিঠি পাঠিয়েছি বেনামী ঠিকানায় বহুদিন। হয়ত সেসব কখ...